ভালবাসা
এবং সুখ পরস্পর বন্ধু।
একদিন
সুখকে ভালোবাসা বললো জানিস আমি আছি বলেই পৃথিবীতে তোর দাম আছে। সুখ মুচকি হেসে
বললো না তোকে দিয়ে আমাকে পায় বলে মানুষ তোর কাছে যায়। সে হিসেবে আমার দাম বেশি।
ভালোবাসা
বললো বেশ তাহলে চল, দুঃখের কাছে যাই তাকে গিয়ে জিজ্ঞাসা করি কার দাম বেশি। সুখ
বললো চল।
তারা দুজন
দুঃখের কাছে গেল্ দুঃখ মন খারাপ করে বসে আছে। সুখ আর ভালোবাসা কে আসতে দেখে
চেহারাটা আরো কালো করে ফেললো।
সুখ বললো
দুঃখ বলো তো পৃথিবীতে কার দাম বেশি, আমার না ভালবাসার ?
দুঃখ ভাবলো
এই তো সুযোগ নিজেকে বড় করার।একে তো তাদের জন্যে মানুষ আমাকে দেখতেই পারে না। আমার
কাছে থেকে দুরে থাকতে চায় । এখন তাদেরকে বড় বললে তারাও আমাকে ঘৃনা করবে। তাই দুঃখ
ভেবে চিন্তে বললো, আসলে আমার জন্যই তোমাদের মূল্যায়ন করা হয়। মানুষকে আমি কষ্ট দেই
বলে মানুষ তোমাদের কছে ফিরে যায়। সে হিসেবে আমার দাম বেশি। তারা কেউ কারো কথা
মানতে রাজি হলো না। সবাই ঠিক করলো ঐশ্বযর কাছে যাবে। সুখ বললো চলো। তিনি বিচক্ষন,
শিক্ষিত মানুষের সাথে তারা চলাফেরা।বুদ্ধিজীবিদের মগজে তার আনাগোনা। তিনিই পারবেন
আমাদের সমাধান দিতে। ঐশ্বয সব শুনে বললো, তোরা সবাই বোকা। আমাকে ছাড়া তোদের আবার
দাম কিরে ! ওই দুঃখ বেটা, মানুষ তোকে ঘৃনা করে কেন ?
দুঃখ হাত
জোড় করে বললো, স্যার আমি শূন্য, মানুষকে কেবল কষ্ট দিই।অামি অন্ধকার।তাই আমার কাছে
মানুষ আসতে চায় না।
ঐশ্বর্য
বললো,আর তার বিপরিত আমি। কিরে সুখ তুই আবার বড় হলি কবে ? তোর সব উপকরন অামিই তো
জোগান দেই।
সুখ আর
দুঃখ দুজনেই জড়সড়ো হয়ে গেলো ভয়ে।কিন্তু ভালবাসা সেই সময় নীরবে মাথা নিচু করে বসে
ছিল।
এশ্বর্য
বললো, তা ভালোবাসা সাহেব আপনার তো অনেক দিন আগে যবনিকা ঘটেছিল। এখন যে প্রদীপের
মতো একটু একটু করে প্রান আছে তাতেই ঢের। মাথায় উঠতে চাইছেন কেন ?
ভালোবাসা
বললো ভূল বললেন, আমার কখনো মৃত্যু হয়নি, হবেও না। যুগ যুগ ধরে মানুষের হৃদয়ে বেচে
থাকবো।
আরে রাখেন
মিয়া, মানুষের হৃদয়ে বেচে থাকবেন। সেই শিরি-ফরহাদ, দেবদাস-পার্বতীর সময় নেই। চলে
গেছে অনেক আগে। এখন মানুষ ভালোবাসতে গেলেও পয়সা লাগে। পেমিকাকে ফুল দিবেন। পাচ
টাকা থেকে আজকের দিনে বিশ টাকা পর্যন্ত। বার্থডে গিফট, ভ্যালেন্টাইন গিফট, পহেলা
বৈশাখ, ডেটিং সেটিং কতো কি।পদে পদে টাকা আর টাকা।আর চটপটি, ফুচকা,চকলেট এগুলোতো অন্যসব
খরচের কাছে দুধভাত।
ক্যালকুলেটর
নিয়ে বয় বেটা হিসাব করে দেখ। ভার্সিটির ক্যঅম্পাস, কলেজে চত্বর, স্কুল মাঠসহ কতো
আনাচে কানাচে হাওয়ায় উড়ে বেড়াচ্ছে তোর আর্তনাদ।পাঠ ক্ষেতে, ঘরের কানাচে, আগানে
বাগারে গুমরে মরচে কতো নিশ্পাপ ভালোবাসা। এখন মাঝে মাঝে ডাস্টবিনেও পাওয়া যাচ্ছে
তোর অবৈধ মিলনের ফসল।আরো ঘৃনার কথা হলো প্রতি বছর ১৪ ফেব্রুয়ারী তোর কারনে সতিত্ব
হারাচ্ছে লক্ষ লক্ষ কুমারী।
শেষ পর্যন্ত
যে কটা ভালোবাসা সফল হয়, দেখা যায় বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সংসার কুপোকাত।
ভালোবাসা
আপত্তি করে উঠলো। বললো আমি মহৎ, নিষ্পাপ, পবিত্র্ মানুষের মনে আমার বসবাস। আমাকে
পেতে কোনো কার্ড লাগেনা, ফুল লাগে না। যে আমার দিকে হাত বাড়ায় তারই হয়ে যাই। আমার
দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আমাকে অপব্যবহার করছে কিছু খারাপ মানুষ।
তবে রে
শালা বলেই তেড়ে গেলো ভালোবাসার দিকে এশ্বর্য।
ঐশ্বর্যর বলিষ্ঠ
শক্তির কাছে পরাজিত অসহায় দুর্বল কোমল ভালোবাসা।
সংগৃহিত.......................................